Ticker

5/recent/ticker-posts

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম কি সূরা ফাতিহার অংশ?

'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' কুরআনের একটি আয়াত এ বিষয়ে কোন মতপার্থক্য নেই। সূরা আন-নামলে এভাবে উদ্ধৃত রয়েছে- 'এই চিঠি সুলায়মানের নিকট থেকে এসেছে এবং তা দয়াময় মেহেরবান আল্লাহ্ তা'আলার নামে শুরু করা হয়েছে।'

কিন্তু 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' সূরা ফাতিহাসহ অন্যান্য সূরার অংশ কিনা? - এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বিভিন্ন মত রয়েছে। নিম্নে তা সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করা হলো-

ইমাম আবু হানিফা রহিমাহুল্লাহ এবং মদীনা, বসরা ও শামের ফুকাহায়ে কেরামদের মতে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' সূরা ফাতিহা ও অন্যান্য সূরার অংশ নয়। শুধু বরকত লাভের উদ্দেশ্যে ও দু'সূরার মাঝে পার্থক্য সৃষ্টি করার জন্য তা নাযিল করা হয়েছে। তবে এটি সূরা নামলের আয়াত এ বিষয়ে কোন মতভেদ নেই।

ইমাম শাফেয়ী, আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহিমাহুল্লাহ এবং মক্কা ও কুফার কারীগণের অভিমত হলো 'বিসমিল্লাহি..' সূরা ফাতিহার অংশ। এজন্য তারা সালাতে সশব্দে 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' পড়তেন।

অধিকাংশ আলিমগণ চুপিচুপি 'বিসমিল্লাহ....' পড়াকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাবরানী, ইবনে খুজাইমা এবং আবু দাউদ রহিমাহুল্লাহর বর্ণনায় রয়েছে- 'রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে 'বিসমিল্লাহ...' আস্তে আস্তে পাঠ করতেন এবং 'আলহামদুলিল্লাহ...' সশব্দে পড়তেন।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম পড়ে সবকিছু শুরু করাই শরীয়াতের হুকুম। পশু-পাখি জবাই করাকালে বিসমিল্লাহ বলা অপরিহার্য। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি কেউ আল্লাহ্ তা'আলার নাম (বিসমিল্লাহ) উচ্চারণ করে শয়তান তার সাথে খেতে পারেনা, আর তাঁর নাম উচ্চারণ না হলে শয়তান অবশ্যই ঐ খাবারে শরীক হয়। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, যে কাজ বিসমিল্লাহ্ ব্যতীত আরম্ভ হয়, তাতে কোন বরকত থাকেনা। অন্য এক হাদীসে বর্ণীত রয়েছে ঘরের দরজা বন্দ করতেবিসমিল্লাহ্ বলবে, বাতি নেভাতে বিসমিল্লাহ বলবে, পাত্র আবৃত করতেও বিসমিল্লাহ বলবে।

উল্লেখ্য কুরআন তিলাওয়াত করার সময় 'বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম' পড়ার পূর্বে আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানর রজিম' পড়াও আবশ্যক। আল্লাহ তা'আলা বলেন, 'অতএব, যখন আপনি কোরআন পাঠ করেন তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করুন।' (সূরা নাহল, আয়াত- ৯৮)


তথ্যসূত্র:

  • তাফসির আল জালালাইন
  • তাফসীরে আহসানুল বায়ান