Ticker

5/recent/ticker-posts

সুন্নাহ্ দ্বারা কুর'আন তাফসীর

কুরআনুল কারীমের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ যখন কুরআন দিয়েই সম্পন্ন করা যাবে না কিংবা কোন অস্পষ্টতা থেকে যাবে তখন রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীসে খুঁজতে হবে। কারণ রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এই কুরআন নাযিল হয়েছে, আর প্রতিটি আয়াত নাযিলের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তিনিই বেশি অবগত।

যেমনটি আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
'...এবং আমি এ যিকর (কুরআন) তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে তুমি লোকদের সামনে তাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তা সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করে দিতে পারো...।' [আন নাহল, আয়াত: ৪৪]

উদাহরণ- ১

আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,
‘আর যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।’ [সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৩৪]

এই আয়াত নাযিল হলে সাহাবায়ে কেরামগণ মনে করলেন কোনো ধন-সম্পদ জমা রাখা যাবে না, তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
‘যদি তুমি তোমার মালের যাকাত আদায় কর তাহলে নিজ থেকে তার ক্ষতিকে তুমি দূর করে দিলে।’

খালেদ ইবন আসলাম বর্ণনা করেন, একদা আমরা আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিআল্লাহু আনহুমার সঙ্গে বের হয়েছিলাম। তাঁর কাছে এক গ্রাম্য লোক ওপরের আয়াতটি উল্লেখ করে জানত চাইল এর ব্যাখ্যা কী? তিনি বললেন,
‘যে ব্যক্তি যাকাত আদায় না করে সম্পদ সঞ্চিত রাখবে তার ধ্বংস অনিবার্য। সম্পদ সঞ্চয় করলে এই শাস্তির বিধান ছিল যাকাত সংক্রান্ত আয়াত নাযিলের আগে। পরে যখন আল্লাহ তা‘আলা যাকাত ফরয ঘোষণা করে আয়াত নাযিল করেন, তখন তিনি যাকাতকে ধন-মালের পরিশুদ্ধকারী করে দিয়েছেন’।

আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিআল্লাহু তা‘আলা আনহুমা বলেন,
‘যে মালের যাকাত আদায় করা হয়, তা যদি যমীনের সাত স্তর নীচেও থাকে, তাহলেও ‘কানয’ তথা সঞ্চিত ধন-রত্নের মধ্যে গণ্য নয়। আর যে সম্পদের যাকাত আদায় করা হয় না, তা যদি যমীনের পিঠে খোলা থাকলেও ‘কানয’ তথা সঞ্চিত ধন-রত্নের অন্তর্ভুক্ত।’

উদাহরণ- ২

আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
'নিশ্চয় আমি তোমাকে কাওসার দান করেছি।' [আল কাওসার, আয়াত: ১]

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আয়াতটি প্রসঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- এই কাওসার দ্বারা জান্নাতের একটি নদীকে বুঝানো হয়েছে যা তাঁকে দান করেছেন। [মুসলিম]

সুতরাং কুরআনুল কারীমের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে করেছেন সেভাবেই আমাদেরকে গ্রহণ করতে হবে। আর তাকে তাফসীরুল কুরআন বিস সুন্নাহ্ বা সুন্নাহ্ দ্বারা কুরআনের তাফসীর বলা হয়।