কুরআনুল কারীম তাফসীরের তৃতীয়ধাপ এটি। অর্থাৎ প্রথম দুটি ধাপ হতে কুরআনুল কারীমের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করতে কেউ অক্ষম হলে তৃতীয় ধাপটি বেছে নিবে। কুরআন ব্যাখ্যার এ প্রক্রিয়াটি তখনই আসবে যখন প্রথম দুটি ধাপ অধ্যয়ন সম্পন্ন হবে।
এ ব্যাপারে প্রখ্যাত মুফাসসির ইবনু কাসীর তার তাফসীর গ্রন্থের শুরুতে বলেন, 'আমরা যদি কুরআন কিংবা সুন্নাহতে কোনো আয়াতের তাফসীর খুঁজে পেতে অক্ষম হই তখন আমরা সাহাবায়ে কেরামদের মতামতের আলোকে তা ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করি। কারণ, ওহী নাযিলের পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির জ্ঞান, কুরআনের পূর্ণাঙ্গ উপলব্ধি ও নেক আমলে সবচেয়ে অগ্রণী হওয়ার কারণে তাঁরা কুরআনকে নিঃসন্দেহে অন্য যে কারো চেয়ে ভালোভাবে বুঝেছেন।'
উদাহরণ- ১
আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
'মুমিন নারীদেরকে বলো, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে সংযুক্ত করে রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে, আর তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে; তবে যা নিজে প্রকাশ হয়ে যায় তা ছাড়া।' [আন নূর, আয়াত: ৩১]
এ আয়াতে 'যা নিজে নিজে প্রকাশ হয়ে যায়' বলতে বুঝানো হয়েছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, 'এর মানে হলো মুখমন্ডল ও উভয় হাত।' [আল মুসন্নাফ, ৪র্থ খণ্ড, ইবনু আবি শাইবাহ্]
উদাহরণ- ২
আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
'আল্লাহর নাযিল করা আইন অনুযায়ী যারা ফয়সালা করে না তারাই কাফির।' [আল মায়িদাহ, আয়াত: ৪৪]
এ আয়াতের ব্যাপারে ইবনু আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, 'এটি প্রকৃত কুফরের চেয়ে ছোট মানের এক প্রকার কুফর।' [হাকিম, ২য় খণ্ড]
ভাষার বিবর্তনসহ আরো কিছু কারণে সাহাবীদের যুগ অতিক্রান্ত হওয়ার পর তাবি'ঈদেরকে আরো অনেক বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করতে হয়। এসব ব্যাখ্যাকে তাফসীর বিল আ-সার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাদের এই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে ভিন্ন ভিন্ন মত পাওয়া গেলে কুরআনের নিজ ভাষার প্রয়োগ পদ্ধতি দ্বারা বিশেষভাবে সমর্থিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের মতামতসমূহের মধ্যে কোন একটির উপর বিশেষ প্রাধান্য দেয়া উচিত নয়।