Ticker

5/recent/ticker-posts

আউযুবিল্লাহ কেন ও কখন পড়বো ?

পবিত্র কুরআনে রয়েছে, "ক্ষমা করে দেওয়ার অভ্যাস করো, ভালো কাজের নির্দেশ দাও এবং মূর্খদের দিক হতে মুখ ফিরিয়ে নাও। যদি শয়তানের কোন কুমন্ত্রণা এসে যায় তবে সর্বশ্রোতা ও সর্বাজ্ঞাত আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করো ।" -(৭: ১৯৯-২০০)

অন্য এক জায়গায় আছে, "অমঙ্গলকে মঙ্গলের দ্বারা প্রতিহত কর, তারা যা কিছু বর্ণনা করেছে তা আমি খুব ভালোভাবে জানি। বলতে থাকো- হে আল্লাহ! শয়তানের কুমন্ত্রণা এবং তাদের উপস্থিতি হতে আমরা আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।" -(২৩: ৯৬-৯৮)

আল্লাহ তা'আলা এই আয়াতসমূহে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, মানুষের শত্রুতার সবচাইতে ভালো ঔষুধ হলো প্রতিদানে তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা। এরুপ করলে তখন শত্রুতা করা থেকেই বিরত থাকবে না, বরং অকৃত্রিম বন্ধুতে পরিণত হবে। আর শয়তানের শত্রুতা হতে নিরাপত্তার জন্য আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইতে বলেছেন । কেননা শয়তানরূপে অকৃত্রিম শত্রুদেরকে উত্তম ব্যবহার দ্বারা আয়ত্তে আনা কখনো সম্ভব নয়। কারণ সে মানুষের বিনাশ ও ধ্বংসের মধ্যে আমোদ পায়।

মহান আল্লাহ বলেন, "কুরআন পাঠের সময় বিতাড়িত শয়তান হতে আমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর৷" -(১৬: ৯৮)

কারীদের একটি দল ও আরো অনেকে বলে থাকে যে, কুরআন পাঠের পর 'আউযুবিল্লাহ' পড়া উচিত। এতে দুটি উপকার রয়েছে- এক তো হলো, কুরআনের বর্ণনারীতির উপর আমল এবং দ্বিতীয় হলো, ইবাদাত শেষে অহংকার দমন। আবু হাতিম এবং ইবনে ফালুফা হামযার এই নীতিই নকল করেছেন। যেমন আবুল কাসিম ইউসুফ বিন আলী বিন জানাদাহ (রহ) স্বীয় কিতাব 'আল ইবাদাতুল কামিল' এর মধ্যে বর্ণনা করেছেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতেও এটা বর্ণিত আছে। কিন্তু হাদীসের পরিভাষায় এর ইসনাদ গারীব (দুর্বল)।

একটি মাযহাবে এরূপ আছে যে, প্রথমে ও শেষে এই দুইবার 'আউযুবিল্লাহ' পড়া উচিত। তাহলে দুটি দলিলই একত্রিত হবে।

জমহুর (অধিকাংশ) উলামার প্রসিদ্ধ মাযহাব এই যে, কুরআন পাঠের পূর্বে 'আউযুবিল্লাহ' পাঠ করা উচিত। তাহলে কুমন্ত্রণা হতে রক্ষা পাওয়া যাবে।

একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, হযরত জীবরাঈল (আ) সর্বপ্রথম যখন প্রত্যাদেশ নিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট আগমন করেন, তখন 'আউযুবিল্লাহ' পড়ার নির্দেশ দেন।

জমহুর উলামার মতে 'আউযুবিল্লাহ' পড়া মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। আ'তা বিন আবি রিরাহের (রহ) অভিমত কুরআন পাঠের সময় 'আউযু' পড়া ওয়াজিব, সালাতের মধ্যেই হোক বা সালাতের বাইরেই হোক। ইবনে সীরিন (রহ) বলেন যে, জীবনে একবার মাত্র পড়লেই কর্তব্য পালন হয়ে যাবে।

ইমাম আবু হানিফা (রহ) ও ইমাম শাফেঈ (রহ) বলেন, এক্ষেত্রে 'আউযু বিল্লাহী মিনাশ্বাইতনীর রজীম' বললেই চলবে।


তথ্যসূত্র:

  • তাফসীর ইবনে কাছীর